বলিউডে কীভাবে জায়গা পেলেন জয়া আহসান
শাহরুখ, আমির, সালমানদের বলিউডে নাম লেখানো সহজ কথা নয়। সারা ভারত থেকে অসংখ্য অভিনয়শিল্পী প্রতিদিন বলিউডে কাজের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। শুধু তা–ই নয়, ভারতের অনেক ইন্ডাস্ট্রির নামকরা অভিনয়শিল্পীরাও বলিউডে অভিনয়ে সুযোগ পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। তার চেয়ে বড় কথা, বলিউডে আপাতদৃষ্টে দেখলে অভিনয়শিল্পীর সংকট নেই। সেই বলিউডে নাম লিখিয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী জয়া আহসান। অভিষেকেই যেন বাজিমাত। বলিউডের অসংখ্য তারকার ভিড়ে কীভাবে জায়গা পেলেন জয়া, সেই প্রশ্নই ঘুরেফিরে শোনা যাচ্ছে।
এক দশকের বেশি সময় আগে কলকাতার সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন জয়া। এ সময় টালিউডে তাঁর একাধিক সিনেমা ব্যবসাসফল হলেও বলিউডের সিনেমায় কেন নাম লেখাচ্ছেন না? এ প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে হয়েছে জয়াকে। সেই জয়া প্রথম ‘কড়ক সিং’ দিয়ে বলিউডে নাম লেখালেন। তাঁর বিপরীতে ছিলেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠি। ইতিমধ্যে সিনেমাটি নিয়ে উষ্ণ প্রশংসায় ভাসছেন জয়া।
জয়া আহসান বলেন, ‘আমার শিকড় তো বাংলাদেশ। দেশের আবহে বেড়ে ওঠা। এখানে নাটকে অভিনয় করেছি। পরবর্তী সময়ে মনে হলো সিনেমা করি। করেছিও। তারপর একটু একটু করে ডালপালা ছড়াতে থাকে। সেই ডালপালা আগের চেয়ে আরেকটু বেশি মিলেছে কলকাতায়। এখানেই থেমে থাকেনি। ইরানি সিনেমায় অভিনয় করলাম। বলিউডে অভিনয়ের সুযোগ হলো। একজন অভিনয়শিল্পী তো আসলে কখনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আটকে থাকে না। আমি হয়তো সব সময় সেই চেষ্টাই করছি। সেখানে প্রতিটা ইন্ডাস্ট্রিতে কী কাজ করছি, সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে। এগুলো ভালো লাগে।’
এর আগেও বলিউডের একাধিক সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন জয়া। কিন্তু ব্যাটে–বলে না মেলায় কাজগুলো করেননি। তিনি ভালো চরিত্রের সন্ধানে ছিলেন। সেখানে ‘কড়ক সিং’–এ ‘নয়না’ চরিত্রের প্রস্তাবের পর আর ‘না’ করতে পারেননি। অবশেষে সেই চরিত্র নিয়ে ভক্তদের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন। এত বড় আয়োজনের সিনেমা, এত তারকা, চ্যালেঞ্জিং চরিত্র এসব কারণে কিছুটা চাপ নিতে হয়েছে জয়াকে। চরিত্র ছাড়া অন্য কিছুই মাথায় ছিল না তাঁর।
‘আমি যেসব চরিত্র করি, সেখানে প্রতিটা গল্পে চরিত্রের আলাদা একটা বৈচিত্র্য থাকে। চরিত্রটির গভীরতা থাকে। নিজের ভালো লাগার মতো বিষয় থাকে। চ্যালেঞ্জিং বিষয় থাকে, সেটাই আমাকে টানে। আর জনপ্রিয়তা পাব কি না, সেটা কখনোই ভাবি না। এগুলো আমাকে ভাবায় না। কাজ করছি ঠিক আছে বলেই। সে নিয়ে দর্শক যখন কথা বলেন, তখন ভালো লাগে। মনে হয় বোনাস হিসেবে কিছু পেলাম,’ বলেন জয়া আহসান।
জনপ্রিয় সব অভিনয়শিল্পীর ভিড়ে বলিউডের প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোর সালতামামিতে জায়গা পাওয়াকে ক্যারিয়ারের অন্য রকম এক প্রাপ্তি বলে মনে করেন জয়া। সিনেমাটি মুক্তির পর বেশ কিছু জাতীয় গণমাধ্যমের সমালোচনা দেখে চমকে গিয়েছেন জয়া। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের কাউকে চিনি না, জানি না, অথচ তাঁরা আমার কাজ দেখে মূল্যায়ন করেছেন। এতটা রিকগনিশন পাব ভাবিনি। এই প্রাপ্তি পুরো টিমের। সবার জায়গা থেকে সবাই ভালো করেছেন।’
‘সবার মধ্যে আলাদা করে জয়া আহসান ভক্তদের নজর কেড়েছেন...’ প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই জয়া বলেন, ‘দেখেন, যাঁরা সিনেমাটি দেখছেন, সবাই কিন্তু গল্পও পছন্দ করেছেন। অনেক দৃশ্যের গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। এমন অনেক দৃশ্য ছিল, যেখানে কথা না বলেও অনেক কিছু বলা হয়েছে। তা ছাড়া আমার সহকর্মীদের মধ্যে পঙ্কজ ত্রিপাঠি, পার্বতী, সঞ্জনা সাংঘি তাঁরাও কিন্তু ভালো করেছেন। আর এই মুনশিয়ানা পরিচালকের। সবকিছু মিলে যখন আলাদা করে কেউ নয়নাকে নিয়ে কথা বলেন, তখন মনে হয়, ঠিকঠাকমতো ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। এমন না যে সব কৃতিত্ব আমার।’

No Comments yet! Be the first to comment. 😊